ইসলামের কন্ঠইসলামের কন্ঠ
সম্পাদকীয়আর্কাইভআমাদের পরিচিতিলেখা পাঠানোর নিয়মাবলীযোগাযোগের মাধ্যম
হাদীস শরীফ

ভালো ও মন্দ কাজের প্রতিদান

মানুষের জীবনের যেকোনো কাজের দুটি দিক রয়েছে। একটি হচ্ছে ভালো দিক অপরটি হচ্ছে মন্দ দিক। মুসলিম হিসেবে নিজে ভালো কাজ করতে হবে এবং যেকোনো ভালো কাজে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। সাথে সাথে নিজে মন্দ কাজ পরিত্যাগ করতে হবে এবং অপরকে পরিত্যাগ করার জন্য বলতে হবে। আর এটার মধ্যে রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের অনেক প্রতিদান। কুরআন হাদিসের আলোকে আমরা সেই প্রতিদান সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে জানব। (ইনশা আল্লাহ)।

মুফতি মুহাম্মাদ আকতার আল-হুসাইন
ভালো ও মন্দ কাজের প্রতিদান

মানুষের জীবনের যেকোনো কাজের দুটি দিক রয়েছে। একটি হচ্ছে ভালো দিক অপরটি হচ্ছে মন্দ দিক। মুসলিম হিসেবে নিজে ভালো কাজ করতে হবে এবং যেকোনো ভালো কাজে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে। সাথে সাথে নিজে মন্দ কাজ পরিত্যাগ করতে হবে এবং অপরকে পরিত্যাগ করার জন্য বলতে হবে। আর এটার মধ্যে রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের অনেক প্রতিদান। কুরআন হাদিসের আলোকে আমরা সেই প্রতিদান সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে জানব। (ইনশা আল্লাহ)।

ভালো কাজের দাওয়াত দেওয়া উত্তম কাজ।

আল্লাহ তায়ালা যত নবী রাসূল এই দুনিয়ার জগতে পাঠিয়েছেন সবার অন্যতম একটি কাজ ছিল দুনিয়ার মানুষকে ভালো কাজের দিকে আহ্বান করা আর মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখা। আর ভালো কাজের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে উত্তম একটি কাজ। এ বিষয়ে কুরআনুল কারীমের সূরা ফুসসিলাতের ৩৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-

وَمَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰہِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ.

"আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত"।

এখানে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বলে দিয়েছেন- যারা আল্লাহর বান্দাদের তাঁর পথে আহ্বান করবে এবং নিজেও সৎকর্মশীল হবে তার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে? এ হলো সেই ব্যক্তি যে নিজেরও উপকার সাধন করেছে এবং আল্লাহর সৃষ্টজীবেরও উপকার করে। সে ঐ ব্যক্তির মত নয় যে মুখে বড় বড় কথা বলে, কিন্তু নিজেই তা পালন করে না। পক্ষান্তরে এ লোকটি তো নিজেও ভাল কাজ করে এবং অন্যদেরকেও ভাল কাজ করতে বলে।

হযরত হাসান বসরী (রঃ) এই আয়াতটি পাঠ করে বলেন- এই লোক গুলোই আল্লাহর বন্ধু। এরাই আল্লাহর ওলী। আল্লাহ তায়ালার নিকট এরাই সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয় এবং সবচেয়ে বেশী প্রিয়। কেননা, তারা নিজেরা আল্লাহর কথা মেনে নেয় এবং অন্যদেরকেও মানাবার চেষ্টা করে। আর সাথে সাথে তারা নিজেরা ভাল কাজ করে এবং ঘোষণা করে যে, তারা আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। এরাই আল্লাহর প্রতিনিধি। (তাফসীরে ইবনে কাছীর)

হিকমত ও সুন্দর ভাবে দাওয়াত দেওয়া।

আল্লাহর বানী মানুষের কাছে কিভাবে পৌঁছাতে হবে সেটা আল্লাহ তায়ালা নিজেই কুরআনুল কারীমের সূরা নহলের ১২৫ নম্বর আয়াতে বলেছেন-

اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَالۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَجَادِلۡہُمۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ وَہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ.

"আপনি আপনার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান করুন এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক করুন। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াত প্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন"।

আল্লাহ তায়ালা স্বীয় রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তিনি যেন আল্লাহর মাখলুককে তাঁর পথের দিকে আহ্বান করেন। ইমাম ইবনু জারীরের (রঃ) উক্তি অনুযায়ী ‘হিকমত’ দ্বারা কালামুল্লাহ ও হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উদ্দেশ্য। আর সদুপদেশ দ্বারা ঐ উপদেশকে বুঝানো হয়েছে যার মধ্যে ভয় ও ধমক থাকে যে, যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে এবং আল্লাহর শাস্তি হতে বাঁচবার উপায় অবলম্বন করে। হাঁ, তবে এটার প্রতিও খেয়াল রাখা দরকার যে, যদি কারো সাথে তর্ক ও বহস করার প্রয়োজন হয়, তবে যেন নরম ও উত্তম ভাষায় তা করা হয়। যেমন কুরআন কারীমের সূরা আনকাবুতের ৪৬ নম্বর আয়াতে হযরত মুসা আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তায়াল বলেছেন-

وَلَا تُجَادِلُوۡۤا اَہۡلَ الۡکِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ.

"আহলে কিতাবের সাথে তর্ক-বিতর্ক করার সময় উত্তম পন্থা অবলম্বন করো"।

আমলকারীর সমান নেকি ও গুনাহ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রতি এত দয়ালু যে, কোন ভালো কাজ করার পর যেভাবে নেকি দান করেন ঠিক আপনার এই ভালো কাজটি যদি অন্য কেউ অনুসরণ করে পালন করে তাহলে সেখান থেকেও আল্লাহ আপনাকে নেকি দান করবেন। আবার তাঁর শাস্তিও বড় কঠিন। আপনি যদি মন্দ কাজ করেন তাহলে আপনি নিজে যেভাবে গুনাহগার হবেন ঠিক আপনাকে অনুসরণ করে যদি কেউ এই মন্দ কাজ করে তাহলে তার গুনাহ থেকে আপনাকেও গুনাহ দেওয়া হবে। এতে অনুসরণকারী ব্যক্তির নেকি বা গুনাহ থেকে কমানো হবে না। মুসলিম শরীফের হাদিসে এসেছে-

عَنْ أَبِي مَسعُودٍ عُقبةَ بنِ عَمرٍو الأَنصَارِي البَدرِي رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله صلى الله عليه وسلم: «مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أجْرِ فَاعِلِهِ.(رواه مسلم)

"হযরত আবূ মাসউদ উক্ববাহ ইবনে আমর আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- যে ব্যক্তি ভাল কাজের পথ দেখাবে, সে তার প্রতি আমলকারীর সমান নেকী পাবে"।

মুসলিম শরীফের আরো একটি হাদিসে এসেছে-

عن أبى هريرة رضي الله عنه قال - قال رسول الله صلى الله عليه وسلم - مَنْ دَعَا إِلَى هُدَىً، كَانَ لَهُ مِنَ الأَجْرِ مِثْلُ أجُورِ مَنْ تَبِعَه، لاَ يَنْقُصُ ذلِكَ مِنْ أجُورِهمْ شَيئاً، وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلاَلَةٍ، كَانَ عَلَيهِ مِنَ الإثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ، لاَ يَنْقُصُ ذلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيئاً.(رواه مسلم)

"হযরত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন-যে ব্যক্তি (কাউকে) সৎপথের দিকে আহ্বান করবে, সে তার প্রতি আমলকারীদের সমান নেকী পাবে। এটা তাদের নেকীসমূহ থেকে কিছুই কম করবে না। আর যে ব্যক্তি (কাউকে) ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করবে, তার উপর তার সমস্ত অনুসারীদের গোনাহ চাপবে। এটা তাদের গোনাহ থেকে কিছুই কম করবে না"।

বুখারী শরীফের হাদিসে এসেছে-

عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم - لاَ تُقْتَلُ نَفْسٌ ظُلْمًا، إِلَّا كَانَ عَلَى ابْنِ آدَمَ الأَوَّلِ كِفْلٌ مِنْ دَمِهَا، لِأَنَّهُ أَوَّلُ مَنْ سَنَّ القَتْلَ.(رواه البخارى)

"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদম আলাইহিস সালাম এর প্রথম ছেলে (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়"।

ভালো কাজে সহযোগিতা করা।

যেকোনো ভালো কাজের সহযোগিতা করা আর মন্দ কাজে সহযোগিতা না করার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাদের উৎসাহ দিয়ে কুরআন শরীফের

সূরা মায়দার ২ নম্বর আয়াতে বলেছেন-

وَتَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَالتَّقۡوٰی - وَلَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَالۡعُدۡوَانِ - وَاتَّقُوا اللّٰہَ - اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ.

"সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর"।

আল্লাহ পাক এ আয়াতের দ্বারা তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে উত্তম কাজে পরস্পরকে সাহায্য করতে এবং খারাপ কাজ পরিহার করে নৈকট্য ও পরহেযগারী অর্জন করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। তিনি তাদেরকে শরীয়ত পরিপন্থী কাজ, পাপ কাজ এবং অবৈধ কাজে পরস্পরকে সাহায্য করতে নিষেধ করছেন।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রঃ) আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- তুমি তোমার ভাইকে সাহায্য কর যদিও সে অত্যাচারী বা অত্যাচারিত হয়। তখন কোন কোন সাহাবী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)! অত্যাচারিত ভাইকে সাহায্য করার অর্থ তো আমরা বুঝলাম, কিন্তু অত্যাচারী ভাইকে কি করে আমরা সাহায্য করবো?” তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন- তুমি তাকে অত্যাচার করা হতে বাধা প্রদান কর ও নিষেধ কর। আর এটাই তাকে সাহায্য করা হবে।(তাফসীরে ইবনে কাছীর)

ভালো কাজের আহবানকারী একটা দল।

দলবদ্ধ হয়ে ইসলামের কাজ করার জন্য আল্লাহ কুরআনুল কারীমের বহু জায়গায় আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন বা উৎসাহ করেছেন। আর বিশেষ করে ভালো কাজের দিকে মানুষকে দলবেঁধে আহ্বান করার উৎসাহ দিয়ে সূরা আল-ইমরানের ১০৪ নম্বর আয়তে বলেছেন-

وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَیَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ - وَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ.

"আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম"।

জিহাদকারীর সমপরিমাণ নেকি।

জিহাদ করা অনেক কঠিন একটা কাজ। আর এটা সবার পক্ষে করা সম্ভব হয় না। জিহাদের জন্য যেমন মনোবল দরকার ঠিক শরীরে শক্তি থাকাও প্রয়োজন। নতুবা শত্রুদের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা দুর্বল লোকদের এমন একটি সুযোগ দিয়েছেন, আর এই সুযোগ শক্তিশালী ব্যক্তি যেভাবে কাজে লাগাতে পারবে ঠিক দুর্বল ব্যক্তিও পারবে। বুখারী শরীফের হাদিসে এসেছে-

عن زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدْ غَزَا، وَمَنْ خَلَفَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِخَيْرٍ فَقَدْ غَزَا.(رواه البخارى)

"হযরত যায়েদ ইবনে খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারীর আসবাবপত্র সরবরাহ করল সে যেন জিহাদ করল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন জিহাদকারীর পরিবার-পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করল, সেও যেন জিহাদ করল"।

জান্নাত বা জাহান্নাম ওয়াজীব।

মহান আল্লাহ মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। আর যখন কোন বান্দা তাঁর হুকুম মেনে ইবাদত করবে তখন আল্লাহ দয়ালু হয়ে ঐ বান্দার জন্য মানুষের অন্তরে ভালো ধারণা পোষণ করিয়ে দেন। আর তার জন্য জান্নাতের সুখ শান্তির ফয়সালা করে দেন। পক্ষান্তরে কেউ যদি তাঁর হুকুম অমান্য করে তাহলে ঐ তার জন্য মানুষের অন্তরে মন্দ ধারণা পোষণ করিয়ে দেন। এবং তার জন্য জাহান্নমের ফয়সালা করে রাখেন। বুখারী শরীফের হাদিসে এসেছে-

عن أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ مَرُّوا بِجَنَازَةٍ فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا خَيْرًا، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ وَجَبَتْ ‏"‏‏.‏ ثُمَّ مَرُّوا بِأُخْرَى فَأَثْنَوْا عَلَيْهَا شَرًّا فَقَالَ ‏"‏ وَجَبَتْ ‏"‏‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ مَا وَجَبَتْ قَالَ ‏"‏ هَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ خَيْرًا فَوَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ، وَهَذَا أَثْنَيْتُمْ عَلَيْهِ شَرًّا فَوَجَبَتْ لَهُ النَّارُ، أَنْتُمْ شُهَدَاءُ اللَّهِ فِي الأَرْضِ.(رواه البخارى)

"হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক সাহাবী জানাযার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁরা তার প্রশংসা করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন- ওয়াজিব হয়ে গেল। একটু পরে অপর একটি জানাযা অতিক্রম করলেন। তখন তাঁরা তার নিন্দাসূচক মন্তব্য করলেন। এবারও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন- ওয়াজিব হয়ে গেল। তখন হযরত উমর ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ) আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! কি ওয়াজিব হয়ে গেল? তিনি বললেন- এই যে প্রথম ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা উত্তম মন্তব্য করলে, তাই তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেল। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্পর্কে তোমরা নিন্দাসূচক মন্তব্য করায় তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব হয়ে গেল। তোমরা তো পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী"।

আমরা আজকের সংক্ষিপত আলোচনা থেকে যা বুঝলাম, তা হচ্ছে নিজে ভালো কাজ করতে হবে এবং অন্যকে জানাতে হবে। নিজে মন্দ কাজ পরিত্যাগ করতে হবে এবং অন্যকে ফিরিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে ভালো কাজ করার ও মন্দ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দান করুন। (আমিন)